মঙ্গলবার, ২৪ Jun ২০২৫, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে গৃহবধূকে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে শাশুড়ি পারুল আক্তারকে (৫০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩ আগষ্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। তারা হলেন- নিহত গৃহবধূর স্বামী আসিকুল হক ও ফুফু শ্বাশুড়ি বিবি হাওয়া আক্তার। মামলার অন্য আসামি মাসিকুল হক শিশু হওয়ায় শিশু আদালতে তার বিচার চলমান রয়েছে। এছাড়া মামলার আরেক আসামি নিহত গৃহবধূর শ্বশুর আনোয়ারুল হক খোকন বিচার চলাকালীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালে করিমগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উলুখলা গ্রামের আসিকুল হকের সঙ্গে মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের নাজির মিয়ার মেয়ে পাপিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নিহত পাপিয়া আক্তারের শ্বশুর আনোয়ারুল হক খোকন, শাশুড়ি পারুল আক্তার, দেবর মাসিকুল হক ও ফুফু শ্বাশুড়ি বিবি হাওয়া আক্তার লিপির পরামর্শে স্বামী আসিকুল হক দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে অত্যাচার নির্যাতন করত। এর মধ্যেই নিহত পাপিয়া অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়লে আসামিরা অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। পরে ২০১৫ সনের ২মে যৌতুকের জন্য মারপিট করে পাপিয়ার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে উন্নত চিকিৎসার নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৫ সালের ৭মে বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত পাপিয়া আক্তারের ভাই সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর ও ফুফু শাশুড়িকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করিমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে গৃহবধূ পাপিয়া আক্তার মারা গেলে মামলাটির সঙ্গে হত্যা মামলা সংযুক্ত হয়। ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর করিমগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক এস এম জহিরুল ইসলাম তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালত দীর্ঘ সাক্ষ্য জেরা শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত গৃহবধূ পাপিয়ার শাশুড়ি পারুল আক্তারকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজল ও আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন।